হোম
মানুষের জীবিকার জন্য প্রয়োজন একটি নিশ্চিত এবং নিরাপদ কর্মসংস্থান। নিশ্চিত ও নিরাপদ কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা, দক্ষতা ও যোগ্যতা। বর্তমান পরিবর্তনশীল চাকরির বাজার উপযোগী শিক্ষা ও দক্ষতাই নিশ্চিত করতে পারে নিরাপদ কর্মসংস্থান।
একজন শিক্ষার্থীর ভালো ফলাফল থাকা সত্ত্বেও চাকরির বাজারে সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয় শুধুমাত্র কর্ম নির্ভর শিক্ষার অভাবে। অনেক সময় বেকারত্বের অভিশাপ বরণ করতে হয় তাদের। অথচ প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতা যেভাবে বাড়ছে একইভাবে বাড়ছে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ। বর্তমান সময়ে একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে দেশে বা দেশের বাইরে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ পাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন সঠিক ক্যারিয়ার পরিকল্পনা। শিক্ষার্থীদের এ পরিকল্পনায় সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে কর্মমূখি শিক্ষা। আর কর্মমূখি শিক্ষার মধ্যে সবচেয়ে যুগান্তকারী উন্নয়ন ঘটেছে কারিগরি শিক্ষা। সেরকম একটি যুগোপযোগী পেশা হচ্ছে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বা বস্ত্র প্রকৌশল। বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাকশিল্প দেশের উন্নয়নের প্রধান শিল্পখাত হিসাবে অবস্থান পাকা করে নেওয়ার পাশাপাশি কৃষির পরে একমাত্র সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে এই খাতটি বিশ্ববাজার থেকে অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী পোশাক উত্পাদক ও রপ্তানিকারক হয়ে ওঠার পাশাপাশি দেশের সর্বাধিক মুদ্রা আনায়নকারী খাত হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। বাংলাদেশে ৫ হাজার এর অধিক কারখানাতে ৩৬ লক্ষ লোক সরাসরি এ শিল্পে কর্মরত রয়েছে।
বর্তমানে বিশাল এই কর্মক্ষেত্র থেকে মোট বৈদেশিক রপ্তানির শতকরা ৮০ ভাগই আসছে যা, মোট জিডিপি-১৩. ৫ শতাংশ।
বিজিএমইএ এর তথ্য মতে যেখানে ১৯৭৮ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানি খাত হতে আসে ১২ হাজার মার্কিন ডলারা যা, ২০১০-২০১১ অর্থ বছরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৭.৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা গত বছরের তুলনায ৪০ শতাংশ বেশি। প্রবৃদ্ধির এই হার ধরে রাখতে পারলে ম্যাকিনজির ভবিষ্যত বাণী অনুযায়ী আগামি ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ প্রতিবছর ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে।
বাংলাদেশ প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার চেয়ে একজন শিক্ষার্থী এসএসসি পাশ করার পরে ডিপ্লোমা ইন-টেক্সটাইল এবং গার্মেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং বিষয়ে পাস করার সাথে সাথেই কর্ম জীবনে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও ডিপ্লোমা পাশের পর চাকরির পাশাপাশি বিএসসি এবং এমএসসি পড়ার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া সম্মান ও সম্মানীর দিক থেকে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মাসিক ন্যূনতম ১২ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সস্টিটিউট এর চিফ ইনসট্রাকটর মো. আমিরুল ইসলাম বলেন,‘ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশের পরপরই টেক্সটাইল এর বিভিন্ন বিভাগ যেমন স্পিনিং ফেব্রিক, ওয়েট প্রসেস ও গার্মেন্টস ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরির করার সুয়োগ। মার্চেন্ডডাইজারসহ জুট মিলে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।’
৫ হাজারের অধিক গার্মেন্টসে বিভিন্ন বিভাগ যেমন কোয়ালিটি কন্টোল, কাটিং, সূইং, স্যামপলিং, ফেব্রিক সেকশন সমূহ ও প্যাটার্ন ডিজাইন বিভাগে প্রচুর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া দেশি বিদেশি বায়িং হাউস গুলোতে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে।
ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাক্রম ৪ বছর মেয়াদি ৮ সেমিষ্টারে সম্পন্ন হয়, প্রতি সেমিষ্টার ৬ মাস অন্তর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। ডিপ্লোমা ইন-টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীগণ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ডিপ্লোমা-ইন-টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং/ গার্মেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং এর সনদ প্রদান করা হয়।
ডিপ্লোমা ইন-টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা এসএসসি (বিজ্ঞান/মানবিক/ব্যবসায় শিক্ষা/ভোকেশনাল/ভোকেশনাল-টেক্সটাইল) পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ ২.০০ পেয়ে পাশ করতে হবে। এইচএসসি উওীর্ণ/অনুওীর্ণ বা পরীক্ষার্থীরাও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন, ভর্তির জন্য ছাএ/ছাএীদের পাসের সন সর্বোচ্চ শিথিলযোগ্য। বিস্তারিত রয়েছে ০১৭১৩৪৯৩২৪৬ নম্বরে।
অফিস চলাকালিন সময়ে ভর্তির আবেদনপত্র, তথ্যবিবরণী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রতিষ্ঠান হতে সংগ্রহ করতে হবে। ভর্তির আবেদনপত্র বোর্ড নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে। নির্বাচিত প্রার্থীদের এসএসসি/সমমান পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র/ ট্রান্সক্রিপ্ট, সনদপত্র, ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপএসহ বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভর্তি হতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দিচ্ছে ফ্রি ল্যাপটপ। বর্তমানে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইন-টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ও গার্মেন্টস ডিজাইনে ভর্তি চলছে।